প্রেমঘটিত কারণেই টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তার (১৬) হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মনির হোসেন নিজেই তার প্রাক্তন প্রেমিক সুমাইয়াকে ঘারসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আত্মহত্যার জন্য মনির নিজের শরীরের বিভিন্ন স্থানে তার ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। বুধবার (২৭ অক্টোবর) হত্যাকাণ্ডের পর টাঙ্গাইল র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১২ সদস্যরা ছায়া তদন্ত শুরু করে।





পরে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে র্যাব নিশ্চিত হয় গুরুতর আহত মনির হোসেনই তার প্রাক্তন প্রেমিকা সুমাইয়া আক্তারকে হত্যা করেছে।টাঙ্গাইল র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার মি. জন রানা হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন মনির হোসেনকে আটক করা হয়েছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র্যাবের প্রহরায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।





মনির কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌর এলাকার মশাজান গ্রামের মেহের আলীর ছেলে। তিনি বাস চালকের সহকারি। আর নিহত ছুমাইয়া একই উপজেলার পালিমা গ্রামের ফেরদৌসুর রহমানের মেয়ে। পরিবারসহ এলেঙ্গা পৌরসভার রিসোর্ট এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। সে এলেঙ্গা রানী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি জানিয়েছেন, মনির হোসেনের সাথে ছুমাইয়ার দুইবছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত দুই মাস আগে তাদের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি হয়। এ কারণে মনির ছুমাইয়ার উপর ক্ষিপ্ত হয়। ছুমাইয়াকে হত্যার জন্য মনির মঙ্গলবার রাতেই সিদ্ধান্ত নেয়।





নিহত সুমাইয়া আক্তার ও মনির এ বিষয়ে তাদের (র্যাব) কাছে তথ্য রয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত যে ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে সেটি মনির হোসেনের। মনির টিকটকের প্রতি আগ্রহ ছিল। মাঝে মধ্যে সে টিকটকে উদ্ধার হওয়া সেই ছুরিটি ব্যবহার করেছে। এছাড়া র্যাবের কাছে বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ রয়েছে যা দেখে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে মনির নিজেই জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।





উল্লেখ্য, বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী এলেঙ্গা-ভূঞাপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব আঞ্চলিক সড়কের পাশে এলেঙ্গা পৌরসভার এলেঙ্গা শামসুল হক কলেজের সামনে খোকন নামের এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের সিঁড়ি থেকে সুমাইয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পাশেই পড়ে থাকা গুরুতর আহত মনির হোসেনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। স্থানীয়রা জানান, সুমাইয়া সকালে বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী প্রাইম কোচিং সেন্টারে যাওয়ার জন্য বের হয়। এরপর তাকে শামসুল হক কলেজের সামনে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে ডেকে নিয়ে সিঁড়ির নিচে জবাইয়ের পর হত্যা করা হয়।




