নওগাঁর রানীনগরে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে আটক করা হয়েছিল দুজনকে। পরে গ্রাম্য সালিশে যুবককে দেড় লাখ ও গৃহবধূকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।প্রেমিকের কাছ থেকে এক লাখ টাকা আদায়ও করা হয়। তবে বাকি টাকা দিতে না পারায় সেই যুবক ও নারী ছেড়েছেন গ্রাম।এ ছাড়া অভিযোগ উঠেছে, গ্রামের সবার ভূরিভোজের নামে আদায় করা সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন ইউপির সাবেক সদস্য মোহসীন মল্লিক ও তার সহযোগী নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য অনিমেষ চন্দ্র সরকারসহ





মাতবররা।ঘটনাটি রানীনগর উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের।স্থানীয়রা জানান, সাত মাস আগে স্থানীয় ওই যুবকের সঙ্গে গৃহবধূর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর মধ্যে গত ১৯ নভেম্বর রাতে গৃহবধূর ঘর থেকে ওই যুবককে আটক করেন মাতবর মোহসীন মল্লিক, অনিমেষ চন্দ্র সরকারসহ কয়েকজন।পরে তারা গ্রাম্য সালিশ ডাকেন। সেখানে গ্রামবাসীকে এক সন্ধ্যা ভূরিভোজ করার নামে যুবককে জরিমানা করা হয় দেড় লাখ টাকা,





আর গৃহবধূকে এক লাখ টাকা।যুবকের পরিবার তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকা শোধ করে ২৬ নভেম্বর বাকি টাকা দেয়ার জন্য সময় নেয়। গৃহবধূকেও ওই দিন টাকা দেয়ার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। তবে বাকি টাকা দিতে না পারায় এখন দুজনই গ্রাম ছেড়েছেন।অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টি কাউকে না জানাতে দুই পরিবারকেই প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন মাতবররা।





এতে প্রভাবশালী পক্ষটির ভয়ে কোনো পরিবারই আইনের আশ্রয়ে যেতে বা কাউকে কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না।এ বিষয়ে ওই গৃহবধূ মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমি পারিবারিকভাবে সুখী নই। স্বামীর পরিবারসহ আশপাশের মানুষের অনেক অত্যাচার সহ্য করে আসছি। হঠাৎ করেই বাড়ির পাশের যুবকের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমরা একে অপরকে ভালোবাসি।’তিনি অভিযোগ করেন, ওই যুবক তাকে বিয়ে করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ছেলের





সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি জেনে যান মাতবরবা। পরে তারা মিথ্যা অভিযোগে তাদের জিম্মি করে কয়েক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন, যা তার পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।তিনি আরও জানান, তিনি ওই যুবককে বিয়ে করতে চান, কিন্তু মাতবররা নানা কৌশলে তা হতে দিচ্ছে না।নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য অনিমেষ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘এ ধরনের





ঘটনা ওই গৃহবধূ আগেও ঘটিয়েছে। গ্রামবাসী ওই গৃহবধূর এ ধরনের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ। গ্রামবাসী এবার সালিশে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই সিদ্ধান্তকেই আমরা বাস্তবায়ন করছি।’রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকন্দ বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি ওই গৃহবধূর কাছে পুলিশ সদস্যকে পাঠিয়েছি খোঁজখবর নিতে এবং সহযোগিতা করতে একটি মোবাইল ফোন নম্বরও দিয়েছি। গৃহবধূ থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’




