bangla music

bangla music

ক্রাইম

আসামির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেটে এসআইয়ের লাথির অভিযোগ

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে গরু চুরি মামলার আসামি ধরতে গিয়ে রিপা আক্তার (২৫) নামের চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর পেটে-পিঠে লাথি মেরে স্বামীকে গ্রেফতার করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।বৃহস্পতিবার (১১ মে) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।আহত রিপা আক্তার গ্রেফতার আবুল হাসেমের স্ত্রী। আসামি হাসেম ওই এলাকার আবুল বাসার লিটনের ছেলে।স্থানীয় ইউপি মেম্বার নবী হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সম্প্রতি এলাকা থেকে

গরু চুরি হয়। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। তবে, তা সম্ভব হয়নি। পরে গরু চুরির বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা হয়। মামলায় আবুল হাসেমকে সন্দেহজনক আসামি করা হয়। ওই মামলায় আবুল হাসেমকে ধরতে পুলিশ আসে। আসামি ধরতে এসে পুলিশ আসামি আবুল হাসেম, তার চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, আবুল হাসেমের বাবা-মাকে মারধর করেছে বলে জানতে পেরেছি।’

অন্তঃসত্ত্বা রিপা আক্তার হাসপাতাল থেকে জাগো নিউজকে বলেন, ‘পুলিশ যখন আসামি ধরতে আসে তখন স্বামী (আবুল হাসেম) ভাত খাচ্ছিলেন। পুলিশ তাকে মারতে মারতে টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করার চেষ্টা করে। তখন আমি পুলিশের পা ধরে বলি, স্যার ভাত খাওয়া শেষ হলে ধরে নিয়ে যান, ভাত খাওয়ার সময় দেন। তখন এমদাদ নামের এক দারোগা আমাকে দুটি লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। পরে উঠে গিয়ে আবারও তাদের পা ধরে বলি, স্যার ভাত খাওয়া শেষ হলে ধরে নিয়ে যান। এ সময় আবারও আমাকে পেটে-পিঠে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। হাতে থাকা লাঠি দিয়ে আমার মাথায় তিন থেকে চারটি আঘাত করে। পরে আমার শ্বশুর-শাশুড়ি ফেরাতে এলে তাদেরকেও মারধর করে তাকে (স্বামীকে) ধরে নিয়ে যায়। পরে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলে শ্বশুর আমাকে গৌরীপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

আসামি আবুল হাসেমের বাবা আবুর বাশার লিটন বলেন, পুলিশের মারধরে আমার পুত্রবধূ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। আমরা এখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছি। রিপার আলট্রাসনোগ্রাফি করা হবে। পরে কথা বলবো বলে তিনি লাইন কেটে দেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক বলেন, ‘ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হাসপাতালে আনার পর অবস্থা কিছুটা খারাপ দেখে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।’

মারধরের বিষয়ে বক্তব্য জানতে গৌরীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমদাদের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আসামি ধরতে গিয়ে কাউকে মারধর করা হয়নি। তবে, যেখানে আসামি ধরতে গিয়েছিল সেই জায়গাটা কর্দমাক্ত ছিল। আসামি ধরার চেষ্টা করলে তারা দা নিয়ে ছাড়িয়ে নিতে আসে। এ সময় ধস্তাধস্তি হলে ওই মহিলা পড়ে যায়। ওই মহিলা অন্তঃসত্ত্বা কি না বিষয়টি আমার জানা নেই।’

গৌরীপুর সার্কেলের এএসপি মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিবপুরে গরু চুরির মামলায় আসামি ধরতে যায় পুলিশ। এ সময় আসামির স্ত্রী পুলিশের পা ধরের। ওই জায়গাটা কর্দমাক্ত হওয়ায় ওই নারী পড়ে যান। তবে, মারধর করেনি।’তিনি আরও বলেন, ‘আসামির মা দা হাতে বের হন। পরে পোশাক পরা পুলিশ দেখে দা ফেলে দেন। যেহেতু ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা, তাই তিনি আহত হতে পারেন। ভিক্টিমের পরিবার এ ব্যাপারে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’